সকালে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা জানলে অবাক হবেন মাত্র ৭ দিন কালোজিরা ও মধু খেলে কি হয় সে সম্পর্কে জেনে নিন
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমরা অনেকেই কম-বেশি মধু ও কালোজিরার গুনাগুন সম্পর্কে কমবেশি জেনে থাকি। তবে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা একসাথে খাওয়ার উপকারিতা হয়তো অনেকেই জানে না মাত্র ৭ দিন সকালে খালি পেটে কালোজিরা ও মধু খেলেই যে উপকার পাওয়া যায় জানলে অবাক হবেন।
পেজ সূচিপত্রঃ সকালে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
- কালোজিরা ও মধুর সর্ম্পকিত তথ্য
- কালোজিরা ও মধু খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি জেনে নিন
- কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
- মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
কালোজিরা ও মধুর সর্ম্পকিত তথ্য
আজ থেকে আরো কয়েক হাজার বছর পূর্বে চিকিৎসাশাস্ত্রে কালোজিরা এবং মধুর ঔষধি উপকারিতা উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু তাই নয় মেডিকেল সাইন্স এর জনক ইবনে সিনা ও বলেছেন সকালে খালি পেটে মাত্র সাত দিন কালোজিরা ও মধু খেলে শরীরে আশ্চর্য কিছু উপকার পাওয়া যায়। আমরা সকলেই জানি কালোজিরা এবং মধু অত্যন্ত উপকারী। কিন্তু বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ জানে না যে কিভাবে এই দুটি খাবার একসাথে খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। আজকের আর্টিকেলে সেই বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা করব।
আরো পড়ুনঃ খালি পেটে কলা খেলে কি হয়?খালি পেটে কলা খাওয়া কি ভালো নাকি খারাপ? কলা খাওয়ার উপকারিতা কি জেনে নিন
কালোজিরায় রয়েছে এন্টি মাইক্রোবিয়াল এজেন্ট অর্থাৎ শরীরের রোগ জীবাণু সরাসরি ধ্বংস করে দেয়। এই উপাদানের জন্য শরীরে সহজে সংক্রামক রোগ বা ছোঁয়াচে রোগ হয় না। কালোজিরা হলো এন্টিবায়োটিক বা অ্যান্টি সেপটিক আর মধুতে রয়েছে 45 এর বেশি খাদ্যগুণ। তবে মধুতে চর্বি ও প্রোটিন নেই। মধু এন্টি মাইক্রোবিয়াল অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান দেহকে যে কোন সংক্রামন রোগ থেকে রক্ষা করে এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়। মধু্তে আরও অনেক গুণ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি গুণ হচ্ছে মধু হাঁপানি শ্বাসকষ্ট কমাতে খুব দ্রুত কাজ করে এবং কালোজিরা তেলেও এই একই গুণ রয়েছে। ঠান্ডা জনিত যেকোনো অসুখ খুব দ্রুত সারিয়ে তুলতে পারে কালোজিরা এবং মধু যদি যদি সঠিক পদ্ধতিতে আপনি খেতে পারেন তাহলে শরীরে সর্বপ্রথম যেটা ঘটবে সেটা হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার এক শক্তিশালী দেয়াল তৈরি হবে।
নিয়মিত এই উপাদান টি খেলে শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে এবং যেকোনো জীবাণুর বিরুদ্ধে আপনার শরীরকে সুস্থ সবল করে তুলবে। সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটবে যদি কালোজিরা নিয়মিত খাওয়া যায়। তাহলে নিশ্চিতভাবে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের রক্তের গ্লুকোজ একদম নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে । তবে ডায়াবেটিস হয়ে গেলে মধুটা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র কালোজিরা খেতে হবে। মধু শুধুমাত্র তারাই কালোজিরার সাথে খেতে পারবেন যাদের ডায়াবেটিস নেই।
কালোজিরা ও মধু খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি জেনে নিন
প্রতিদিন সকালে কালোজিরা ২১-২০টি এবং এক চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে সেবন করতে হবে। অনেকে কিন্তু কালোজিরার তেল খেয়ে থাকে। যারা তেল খান তাদেরকেও জানা উচিত খালি পেটে সকালে পানি পান করার ৩০ মিনিট পরে এই কালোজিরা এবং মধুর মিশ্রণ সেবন করবেন। কালোজিরা খুব ভালোভাবে চিবিয়ে খাবেন এ নিয়মে সকালেই খেতে পারবেন। টানা একমাস পর্যন্ত খেলেও কোন ধরনের ক্ষতি হবে না। তবে যদি শরীরে কোন ব্যথা থাকে তাহলে আপনাকে সকালে এই মিশ্রণ সেবন করার পাশাপাশি রাতে শরীরের ব্যথা স্থানে কালোজিরার তেল মালিশ করতে হবে।
মনে রাখবেন তেল খাওয়ার চেয়েও মালিশ করার জন্য শ্রেষ্ঠ আর সরাসরি কালোজিরা টা খাওয়ার জন্য শ্রেষ্ঠ। কালোজিরার তেল আপনার শরীরের জয়েন্টের ব্যথা এবং যেকোনো ধরনের বাতের ব্যথার স্থানে মালিশ করলে খুব দ্রুত উপকার পাওয়া যায় এবং যারা কালোজিরাকে চিবিয়ে খেতে পারেন না তার পাশাপাশি তারা যদি অন্তত আদা চামচ পরিমাণ তেল খান তাতেও কিন্তু আপনি যথেষ্ট উপকার পাবেন।
বিশেষ করে আপনার বুকে জমে থাকা কফ থেকে মুক্তি পাবেন শ্বাসকষ্ট কমে যাবে কাশি থাকলে কাশি ও ভালো হয়ে যাবে। অর্থাৎ ঠান্ডা জনিত এলার্জিক যেকোনো ধরনের রোগ থেকে আপনি মুক্তি পাবেন। সর্বশেষ যেটি করতে পারেন এক গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে হাফ চা চামচ কালোজিরা বা কালোজিরার পাউডার মিশিয়ে নিতে পারেন এটি খুব ভালো করে মিশিয়ে নেবেন তারপর দুধ-কুসুম গরম থাকা অবস্থায় তার মধ্যে এক চা চামচ মধু মেশাবেন। যদি আপনার ডায়াবেটিস না থাকে এবং সেটা আপনি সন্ধ্যা বেলা খেয়ে ফেলবেন এবং রাতে ঘুমানোর আগে আপনার বুকে এবং পিঠে কালোজিরার তেল মালিশ করতে হবে। যদি খুব বেশি বুক পিঠ ব্যথা করে অথবা যে কোন প্রকার আর্থ্রাইটিস বা বাতের ব্যথা থাকে।
সর্বশেষ বলবো আল্লাহর রাসূল (সঃ) এর সেই হাদিসটি কথা স্মরণ রাখবেন-রাসুল (সঃ) বলেছেন কালোজিরা সকল রোগের প্রতিষেধক শুধুমাত্র মৃত্যু ব্যতীত।
কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে
- হজমে সাহায্য করে
- অতিরিক্ত চর্বি কমায়
- ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে
- মাথাব্যথা দূর করে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা দূর করে
- যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- শিশুদের দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে
- বাতের ব্যথা দূরে রাখে
মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
- সর্দি কাশি ভালো করে থাকে
- পাকস্থলীর সমস্যা দূর করে
- শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে
- ওজন বৃদ্ধি করে
- মুখে রুচি বাড়াতে সহায়তা করে
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে
- শরীরের সামুদ্রিক শক্তি ও তারণ্য বাড়ায়
- হাড় ও দাঁতের ক্যালসিয়াম বৃদ্ধি করে
- চুলের গোড়া শক্ত রাখে
- নখের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করে
- ভঙ্গুরতা রোধ করে
- বয়সের ছাপ দূর করে
শেষ আলোচনাঃ উপরিউক্ত আলোচনা যদি সম্পূর্ণ আকারে মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি জানতে পেরেছেন মধু ও কালোজিরা খেলে কি উপকার পাওয়া যায়। তাই শরীরের নানান রকম সমস্যার সমাধান করতে মধু ও কালোজিরার এই মিশ্রণটি সেবন করুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url