গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা অথবা ১ থেকে ৯ মাসে গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা সর্ম্পকে জেনে নিন

আপনি কি গর্ভবতী অবস্থায় খাবারের তালিকা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। নতুন অবস্থায় আমরা অনেকেই জানিনা  গর্ভকালীন সময়ে আমাদের কি কি খাবার খেতে হয়। তাই গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা অথবা ১ থেকে ৯ মাসে গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো ।



 তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নিন গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা অথবা ১ থেকে ৯ মাসে গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা  সর্ম্পকে।


পেজ সূচিপত্রঃগর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা অথবা ১ থেকে ৯ মাসে গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা সর্ম্পকে জেনে নিন




মা হওয়া প্রতিটি মেয়েরই অন্যরকম অনুভূতি । গর্ভাবস্থায় মা এবং গর্ভের বাচ্চার স্বাস্থ্যের পরিচর্যা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে মায়ের খাদ্য তালিকা কারণ মায়ের খাবারের উপর নির্ভর করছে গর্ভের বাচ্চার খাওয়া, স্বাস্থ্য ও সুস্থতার। কেননা গর্ভকালীন সময়ে সঠিক নিয়মে খাবার না খেতে পারলে গর্বের বাচ্চার উপর তার প্রভাব ফেলে এবং এতে করে গর্ভের বাচ্চার নানান রকমের সমস্যা হয়ে থাকে। তার সাথে  গর্বের বাচ্চা স্বাস্থ্যহীনতায় ও পুষ্টিহীনতায় ভুগে থাকে।

 

গর্ববতী মায়ের ওজন কত হওয়া উচিত


গর্ভাবস্থায় শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরির প্রয়োজন কারণ এ সময়ে মায়ের কোষ অম্লা গঠিত হয়। তাই এ সময়ে সাধারণ খাবারের পাশাপাশি কিছু অতিরিক্ত খাবার খাওয়াও প্রয়োজন। যে সকল মায়ের ওজন সঠিক থাকে তাদের গর্ভবতী হওয়ার পরে  ১০ থেকে ১১ কেজি ওজন বাড়াতে বলা হয়ে থাকে। আর যাদের বেশি ওজন থাকে তাদের ৫ থেকে ৭ কেজি ওজন বাড়াতে হয়।

আরো পড়ুনঃ কিডনিতে পাথর হয়েছে কিনা কিভাবে বুঝবেন

তাই আজকের আলোচনা গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা অথবা ১ থেকে ৯ মাসে গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকায় কি কি খাবার প্রয়োজন বা খাদ্য তালিকায় কি কি খাবার না থাকলে গর্ভবতী মায়ের সমস্যা হতে পারে সেই সকল খাবার সম্পর্কে আলোচনা করব।


ট্রাইমিস্টার কি?


গর্ব অবস্থায় সাধারণত ৯ মাসের কিছু বেশি দিন থাকে। এই নয় মাসকে তিন ভাগে ভাগ করা হয় প্রথম তিন মাসকে ফাস্ট ট্রাইমিস্টার ও দ্বিতীয় তিন মাসকে সেকেন্ড ট্রাইমিস্টার এবং পরের সাত মাস থেকে বাচ্চা জন্মের আগ পর্যন্ত সময়কে থার্ড ট্রাইমিস্টার বলা হয়ে থাকে। 


আরো পড়ুনঃ কিভাবে মোটা হওয়া যায়


প্রথম ট্রাইমিস্টার গর্ভাবস্থায় প্রথম দিকে অনেক  মহিলারা চিন্তিত অবস্থায় থাকে। তাদের শারীরিক পরিবর্তন নিয়ে বিশেষ করে যারা প্রথম মা হতে যাচ্ছে। এ সময় অতিরিক্ত খাবার খেতে হবে জেনে প্রচুর পরিমান খাবার খেয়ে তাদের ওজন অতিরিক্ত পরিমাণে বাড়িয়ে ফেলে। খাবার অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ক্ষতি হয় মা  এবং বাচ্চা দুজনেরই।


প্রথম ট্রাই মিস্টার অর্থাৎ গর্ব অবস্থায় প্রথম তিন মাসের খাবারের তালিকায় যা থাকছে 


দৈনন্দিন খাবারের সাথে অতিরিক্ত এক গ্লাস দুধ  খেতে পারেন। এছাড়া তাজা ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন। এছাড়াও এ সময়ে প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া উচিত। এই সময়ে অতিরিক্ত কিছু জিনিস অবশ্যই দরকার তার মধ্যে একটি হলো ফোলেড বা ফোলিক এসিড। ফোলেড এসিড কিছু প্রাকৃতিক খাবারে পাওয়া যায়। যেমন করলা, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, মেথি , বাদাম ও কিসমিস। কিন্তু শুধুমাত্র খাবার খেয়েই শরীরের চাহিদা পূরণ হয় না। তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ফোলিক এসিড নামক ওষুধ সেবন করতে হবে। ফোলিক এসিড এর অভাব হলে বাচ্চার গঠনে বাধাপ্রাপ্ত হয়। কেননা এ সময় বাচ্চার মাথা ও মেরুদন্ডের গঠন শুরু হয়। আর এই গঠনের জন্য ফোলিক এসিড খুব  প্রয়োজন। তাই অবশ্যই ফোলিক এসিড সেবন করবেন  চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।

 

দ্বিতীয় ট্রাই মিস্টার অর্থাৎ চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ মাসের খাবার তালিকায় যা থাকছে


অতিরিক্ত ২০০ থেকে ৩০০ ক্যালোরি আবার বেশি খাওয়া প্রয়োজন। এ সময়ে সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে অথবা মহিলার প্রতিদিন ২২০০ ক্যালোরি খাবারের প্রয়োজন। তাই গর্ভবতী অবস্থায় দৈনিক ২৫০০ ক্যালোরি খাবার খাওয়া প্রয়োজন । এ সময় ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খেতে হয় প্রচুর পরিমাণে। কারণ এই সময়ে ব্রেন মস্তিষ্ক এবং চোখের গঠন হয়ে থাকে। আর এই গঠন সঠিকভাবে হওয়ার জন্য এই পুষ্টিকর খাবারগুলো খুব প্রয়োজন ।

আরো পড়ুনঃ কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার


ভিটামিন ডি পাবেন সূর্যের আলোতে দুধে দইয়ে এবং গমে । এছাড়াও সামুদ্রিক মাছ খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে। আয়োডিন খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে কেননা এই সময়ে বাচ্চার থাইরয়েড কাজ করা শুরু করে। তাই থাইরয়েডের জন্য আয়োডিনযুক্ত খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান । এছাড়াও এই সময়ে ক্যালসিয়াম খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে। কেননা এটি বাচ্চার হাড় মাংস গঠনে সহায়তা করে ।ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় দুধ দই চিজ ইত্যাদিতে। সাধারণত এই সময় আয়রন প্রয়োজন ৪০ মিলিগ্রাম প্রতিদিন। তাই  চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন ট্যাবলেট খাবেন এছাড়াও এ সময়ে কিছু মিনারেল ও ভিটামিন খাওয়া দরকার ।


তৃতীয় ট্রাই মিস্টার অর্থাৎ সপ্তম থেকে বাচ্চা জন্মানোর আগ পর্যন্ত খাবারের তালিকায় যা থাকছে


এ সময়ে পানি প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে কেননা এ সময় কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আগাছা অনেক মহিলাদের কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয়। তবে এই সময়ে আঁশযুক্ত  ফল ও শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন । এসব খাবারে অনেক আঁশ রয়েছে যা পায়খানা নরম করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। খুব ঝাল এবং ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলতে হবে কেননা এসব খাবার খেলে এসিডিটি হয়ে থাকে।


গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা অথবা ১ থেকে ৯ মাসে গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকাঃ শেষ কথা


উপরের আলোচনার মাধ্যমে আশা করি বুঝতেই পারছেন একজন গর্ভবতী মায়ের কি রকম কি ধরনের খাবার মেইনটেইন করা উচিত। কেননা খাবারের মধ্য দিয়েই বাচ্চার শারীরিক গঠন তৈরিতে সাহায্য করে। তাই আপনি যদি সঠিক সময়ে সঠিক নিয়মে খাবার না খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার বাচ্চার শারীরিক গঠনে সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার পাশাপাশি তার নানান ধরনের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে। তাই আপনাকে নিয়ম মেনে সকল ধরনের খাবার খেতে হবে তা না হলে বাচ্চার বিকাশ গঠনে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে । আমাদের পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অন্যদের মাঝে শেয়ার করে দিন এবং অন্যান্য সকল ধরনের টিপস পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url