অলিভ অয়েল তেল যেসব রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা অধিকাংশ মানুষই জানেনা অলিভ অয়েল এর গুনাগুন সম্পর্কে। অলিভ অয়েল তেলে রয়েছে অসাধারণ কিছু গুনাগুন যেটি আমাদের শরীরের রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু কিভাবে সাহায্য করে থাকে কি কি রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে? সে সম্পর্কে অনেকেরই অজানা অলিভ অয়েল তেল যেসব রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে সে সম্পর্কে যদি আপনি না জেনে থাকেন তাহলে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
তাহলেই জানতে পারবেন অলিভ অয়েল তেলের বিশেষ গুনাগুন কি কি কাজ করে থাকে এই অলিভ অয়েল তেল? তাহলে দেরি না করে দেখে নিন অলিভ অয়েল তেল যেসব রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে।
পেজ সূচিপত্রঃঅলিভ অয়েল তেল যেসব রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে
- অলিভ ওয়েল তেলের স্বাস্থ্য উপকারিতা
- অলিভ অয়েল তেল যেসব রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে তার কিছু বৈশিষ্ট্য
- অলিভ অয়েল তেল যেসব রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে শেষ আলোচনা
অলিভ ওয়েল তেলের স্বাস্থ্য উপকারিতা
সাদা তেলের বদলে স্বাস্থ্য সচেতনরা বেছে নিয়েছেন অলিভ অয়েল তেল। অলিভ অয়েল তেল এর স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক যা বলে শেষ করা যাবে না। এই তেল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে চিকিৎসাবিদরা। জলপাই তেলে স্বাস্থ্যকর মনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। অলিভ অয়েলে রয়েছে ফলিক এসিড নামক মনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। গবেষণায় দেখা গেছে ফলিক এসিড প্রদাহ নাশক হিসেবে কাজ করে। সেই সঙ্গে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ও আটকাতে পারে।
অলিভ অয়েলে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এতে উপকারী ফ্যাটি এসিড এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন ই এবং কে অলিভ অয়েলের থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট দুরারোগ্য ব্যাধি থেকেও মুক্তি দিয়ে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে। রক্তের কোলেস্টেরলকে জারণ থেকে রক্ষা করে এতে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
প্রদাহ নাশক হিসেবে কাজ করে অলিভয়েলে থাকা উপাদান সমূহ। দীর্ঘস্থায়ী রোগ যেমন ক্যান্সার , হৃদরোগ , হজমে সমস্যা , ডায়াবেটিস এবং স্থুলতার সঙ্গে লড়াই করে অলিভ ওয়েলের অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য।
বিজ্ঞানীদের ধারণা সাড়ে তিন চামচ এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রদান ওষুধ হিসেবে ওলিও কান্থাল আইবুপ্রোফেন ওষুধের কাজ করে।
অলিভ অয়েল তেল যেসব রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে তার কিছু বৈশিষ্ট্য
- অলিভ অয়েল স্ট্রোক প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। রক্ত জমাট বাধা বা রক্ত ক্ষরণের কারণে মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহে ব্যাঘাত ঘটে আর এ কারণেই স্ট্রোক হয়। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে স্ট্রোকের মৃত্যুর হার অনেক বেশি ৮ লাখ ৪১ হাজার মানুষের উপর। গবেষণা করে দেখা গেছে অলিভয়েলে থাকা মনস্যাচুরেটেড ফ্যাট স্ট্রোক ও হৃদ রোগের ঝুঁকি কমায়। যারা অলিভ অয়েল তেল নিয়মিত গ্রহণ করেছেন তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় অনেক কম ছিল।
- অনিয়মিত জীবন যাপনের কারণে হৃদরোগে আক্রান্তের হার দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে ফাস্টফুড জাতীয় খাবার এই রোগের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয় । আর ফাস্টফুড জাতীয় খাবারগুলো তৈরি করা হয় সয়াবিন তেল দিয়ে এজন্য অলিভ অয়েল যারা নিয়মিত গ্রহণ করেন তাদের ক্ষেত্রে হৃদরোগ হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশেই কমে থাকে।
- শরীরের খারাপ এলডিএল কোলেস্টেরলকে জারণ থেকে রক্ষা করে অলিভ অয়েল। রক্তচাপ কমিয়ে হৃদরোগ থেকে বাঁচায় অলিভ অয়েলে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো। সমীক্ষায় দেখা গেছে জলপাই তেল গ্রহণের ফলে রক্তচাপে ওষুধের প্রয়োজনীয়তা 48 শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।
- যদিও অলিভ অয়েল ওজন বৃদ্ধি বা কমার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় তবে ৭ হাজার স্প্যানিশ কলেজ ছাত্র-ছাত্রীদের উপর এক মাস গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে প্রচুর পরিমাণে জল পাই তেল খেয়েও তাদের ওজন বাড়েনি। জলপাই তেল সমৃদ্ধ খাবার রক্তে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ বাড়ায় যা ওজন কমার সঙ্গে সম্পৃক্ত।
- ৪০ বছরের পর থেকে অনেকেই আলঝেইমার রোগে ভুগে থাকেন। এক্ষেত্রে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সবসময় ভুলতে শুরু করেন। অলিভ অয়েল আলঝেইমার রোগের সঙ্গে লড়াই করে । আলঝেইমার রোগটি বিশ্বের সর্বাধিক নিউরোডিজেনারেটিভ ডিসঅর্ডার।
- এই রোগ হলে মস্তিষ্কের কোষের ভিতরে তথাকথিত অ্যামাইলয়েড বিটা নামক এক ধরনের প্রোটিনের উৎপাদন বাড়ে। ইঁদুরের ওপর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে জলপাই তেলে থাকা উপাদান সমূহ ক্ষতিকর অ্যামাইলয়েড বিটা বৃদ্ধির হার কমায়।
- জলপাই তেল ডায়াবেটিসের ঝুকি কমায় বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে অলিভ অয়েল রক্তে শর্করা ও ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
- অলিভ অয়েলের গ্রহণের ফলে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিও ঠেকানো যায় কারণ এই তেলে অ্যান্টিক ক্যান্সার বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে ।
- অলিভয়েলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি রেডিকেল ধ্বংস করে যা ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি । টেস্ট টিউব সমীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে জলপাই তেলের যৌগ গুলো ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।
- রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের সমস্যার অনেকেই ভুগে থাকেন। বিশেষ করে বয়স হলে শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টের ব্যথা বেড়ে যায় রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস হলো একটি অটোইমিইউন রোগ। অলিভ অয়েল তেলে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান সমূহ আর্থ্রাইটিস থেকে মুক্তি দেয়।
- এক সমীক্ষায় দেখা গেছে অলিভ অয়েল ও ফিস ওয়েল জয়েন্ট এবং বাতজনিত রোগথেকে মুক্তি দেয়।
- এন্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণসম্পন্ন অলিভ অয়েল শরীরের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া গুলোকে ধ্বংস করে এর মধ্যে একটি হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি এই জীবাণু পেটে বাসা বাঁধায় আলসার এবং পাকস্থলীর ক্যান্সার সৃষ্টি করে । টেস্ট টিউব সমীক্ষায় দেখা গেছে জলপাই তেল এই ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করে।
সতর্কতাঃ বাজারে নানা ব্রান্ডের এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল রয়েছে। সবগুলোই কিন্তু আসল জলপাই তেল নয় এজন্য জেনে বুঝে আসল একটা ভার্জিন অলিভ অয়েল কিনবেন।
অলিভ অয়েল তেল যেসব রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে শেষ আলোচনা
অলিভ অয়েলের মধ্যে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট হিসেবে ধরা হয় এক্সট্রা ভার্জিন। অলিভ অয়েল এর যথেষ্ট স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পলিফেনাল সমৃদ্ধ অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল আন্টি ইনফ্লেমেটরি এবং এন্টিএজিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাই জেনেটিক স্বাস্থ্য এবং আয়ুষ্কালের ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। রান্নায় অলিভ অয়েল ব্যবহার করাকে অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর বলেই মনে করেছেন পুষ্টিবিদ্যারা।
সচেতনদের অনেকেই এখন রান্নায় সয়াবিন তেল ব্যবহার করা অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। সয়াবিন তেলের পরিবর্তে এখন অনেকেই পছন্দ করে সূর্যমুখী তেলের ব্যবহার। আবার অনেকেই পছন্দ করেছেন অলিভ অয়েলকে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন রান্নায় নিয়মিত অলিভ অয়েল ব্যবহারে ঝুঁকি কমে বেশ কিছু জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষাও করে থাকে।
উপরিউক্ত আলোচনার সাপেক্ষে আশা করি জানতে পেরেছেন অলিভ অয়েল তেলের বিশেষ গুণাগুণ সম্পর্কে। তাই স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে এবং বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে অলিভ অয়েল তেলের ব্যবহার অবশ্যই নিশ্চিত করবেন ।যারা এখনো সয়াবিন তেল রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকেন তারা সয়াবিন তেল বাদ দিয়ে অলিভ অয়েল তেল বেছে নিন।সেটি আপনার শরীরের জন্য যেমন উপকার তেমন নানান ধরনের রোগ থেকেও আপনাকে মুক্তি পেতে সাহায্য করবে।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url