কোন রোগের জন্য কোন চিকিৎসকের কাছে যাবেন? কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন - ডাক্তারের কাছে গিয়ে কি বলবেন জেনে নিন সকল বিষয়ের অজানা তথ্য
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা আশা করি সবাই ভালো আছেন। দেশে এমনও অধিকাংশ অনেক মানুষ আছে যারা বুঝতে পারেনা কোন রোগের জন্য কোন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত? তাই আজকের আর্টিকেলে বলবো কোন রোগের জন্য কোন চিকিৎসকের কাছে যাবেন এবং কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন ডাক্তারের কাছে গিয়ে কি বলবেন? এই সকল বিষয় নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলটি। আপনি যদি এই সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পেজ সূচিপত্রঃ ডাক্তারের কাছে গিয়ে কি বলবেন জেনে নিন সকল বিষয়ের অজানা তথ্য
- কোন রোগের জন্য কোন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
- ক্রনিক রোগ কি?
- ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পূর্বে যা করা উচিত
- নিচে কয়েকটি রোগের উল্লেখ করা হলো অর্থাৎ কোন রোগের চিকিৎসার জন্য কোন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন জেনে নিন
- আমাদের শেষ আলোচনা
কোন রোগের জন্য কোন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
মাথা ব্যথা বুক ব্যথা পেটে ব্যথা এবং পায়ে ব্যথা সবকটি ব্যথা। তবে প্রত্যেকটির জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা ডাক্তার। কোন রোগের জন্য কোন ডাক্তার এর কাছে যাওয়া দরকার সেটা বুঝে উঠতে অনেক সময় সমস্যায় পড়তে হয় রোগী ও তার পরিবারকে। কখনো কখনো অর্থের অপচয় হচ্ছে এর মাধ্যমে। কোনো কোনো উন্নত দেশের নিয়ম হচ্ছে যে কোনো রোগ হলে প্রথমে সাধারণ চিকিৎসক বা জেনারেল বিদেশিয়ানদের কাছে যান। জেনারেল বিদেশিয়ান প্রয়োজন বুঝে সে রোগের বিশেষজ্ঞের রোগীকে পাঠান।
আমাদের দেশে নানা কারণে এর চর্চা খুব একটা নেই। একেক রোগের একেক উপসর্গ থাকে। উপসর্গ শুনেই সাধারণ রোগের একটি তুলনা করতে পারেন চিকিৎসকরা। রোগী অনেক সময় সেটা নাও বুঝতে পারে। উদাহরণস্বরূপ - একজনের ডায়রিয়া হয়েছে তিনি একজন জেনারেল বিদেশিয়ান এর কাছে গেলেন তিনি উপসর্গ বিবেচনা করে প্রাথমিক ওষুধ পত্র দিবেন এবং স্যালাইন দেবেন প্রয়োজনে কোন পরীক্ষা করাতে বলবেন। এরপর তিনি যদি মনে করেন পরিপাক বিশেষজ্ঞ দরকার তাহলে রোগীকে সেখানে পাঠাতে বলবেন। তবে আর্থ-সামাজিক কারণ সহ নানান কারণে আমাদের দেশে এভাবে চিকিৎসা সেবা অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হয়ে ওঠেনা তার ফলে সরাসরি বিশেষজ্ঞ দেখাতে গিয়ে অনেক সময় আশঙ্কা থাকে।
আরো পড়ুনঃ মৌরি খাওয়ার ১০টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সর্ম্পকে জেনে নিন
ভুল চিকিৎসক নির্বাচনের যেমন কারো রাতের বেলায় শ্বাসকষ্ট হচ্ছে এর কারণ হতে পারে হাঁপানি বা ব্রংকাইটিস অথবা হৃদরোগের কারণেও এমন হতে পারে। রোগী এখন বক্ষবাদী বিশেষজ্ঞদের কাছে যাবেন নাকি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে যাবেন? একজন জেনারেল বিদেশিয়ান লক্ষণ বুঝে বলে দিতে পারেন রোগীকে কার কাছে যেতে হবে। তবে কিছু ব্যতিক্রম আছে রোগী যদি শিশু হয় তাহলে তাদের যেকোনো সমস্যাই শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উত্তম। কারণ শিশুদের বংশদের মাত্রা ভিন্ন হয় রোগের উপসর্গ অনেক সময় বড়দের মত হয় না। আবার শিশুরা বড়দের মতো মুখে বলতেও পারেনা। শিশুর যে কোন সমস্যার পরামর্শের জন্য আশেপাশে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে সব সময় সুসম্পর্ক ও যোগাযোগ রাখা উচিত।
যিনি শিশুটির সকল বিষয় আগে থেকেই জানেন। শিশু বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন মনে করলে অন্য কোন শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠাবেন। আবার রোগী যদি অন্তঃসত্ত্বা হন তাহলে তার যেকোনো সমস্যার জন্য স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ গাইনি ডাক্তার এর কাছে যাওয়াই উত্তম। তিনি প্রয়োজন বোধে উক্ত রোগীর অন্য কোন সমস্যা থাকলে সেজন্য সে রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার করে সমন্বিত চিকিৎসা নিতে পারেন।
ক্রনিক রোগ কি?
ক্রনিক রোগ যেমন ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ ইত্যাদির ক্ষেত্রে একজন ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে থাকা দরকার । এসব ক্ষেত্রে বারবার ডাক্তার চেঞ্জ না করাই ভালো। কারণ এ তে সে চিকিৎসক তার অতীত ইতিহাস জানেন রোগীর কোন ঔষধে ভালো কাজ করে কোনটাতে এনার্জি আছে কখন কি জটিলতা হয়েছে ইত্যাদি বিষয়ে সম্পর্কে তার জানা থাকে। কিছু কিছু উপসর্গ আছে যেগুলো জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসা দরকার।
এসব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের সিরিয়াল অপেক্ষা না করে সরাসরি হাসপাতালে জরুরী বিভাগে নিয়ে যেতে হবে। যেমন হঠাৎ বুকে প্রচণ্ড ব্যথা হঠাৎ প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট ভুল বা অসক লগ্ন কথাবার্তা হঠাৎ জ্ঞান হারানো শরীরের কোন অঙ্গ অবশ হয়ে পড়া প্রচন্ড আঘাত পাওয়া বা হাড় ভাঙ্গা। প্রচন্ড পেটে ব্যথা অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু গিলে ফেলা বিষক্রিয়া হওয়া। এসব ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করাটা জরুরী। পরে প্রয়োজন বোধে বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া যেতে পারে।
ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পূর্বে যা করা উচিত
ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পূর্বে রোগীর উপসর্গ বা আনুষঙ্গিক বিষয়ের একটি লিখিত তালিকা তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনি হয়তো ডাক্তারকে এমন কোন তথ্য দিতে চান যা কথা বলার সময় আপনি ভুলে যেতে পারেন বা মনে নাও থাকতে পারে ।রোগ সংশ্লিষ্ট কোন কিছু সংকোচের কারণে ডাক্তারের কাছে লুকাবেন না। যেমন - ধূমপান , মদ পান বা ব্যক্তিগত কোন অসস্তি কর সমস্যার কথাডাক্তার জানতে চাইলে লুকানো উচিত নয়।
কারণ ঔষধ সিলেকশনের গুরুত্ব রয়েছে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার সময় অবশ্যই আগের প্রেসক্রিপশন গুলো সাথে করে নিয়ে নিন এবং এখন কি কি ঔষধ খাচ্ছেন তা ডাক্তারকে জানান। বর্তমানে কেউ কেউ নিজের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা থাইরয়েডের মাত্রা ইত্যাদি টেস্ট করিয়ে থাকেন। যখন আপনি যে কোন রোগের চিকিৎসা নিতে ডাক্তারের কাছে যাবেন তখন আপনার সাম্প্রতিক টেস্টের রিপোর্ট চিকিৎসককে দেখাবেন । এটি ঔষধ নির্বাচনে চিকিৎসককে সহায়তা করবে । ডাক্তারের চেম্বারে অবস্থানরত স্টাফের সাথে ভালো ব্যবহার করুন তাতে করে আপনার সু চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সহায়তা হবে।
ডাক্তারের সাথে কথা বলার সময় আনুষঙ্গিকতা যৌক্তিকতা ও সুনির্দিষ্টতা বজায় রাখুন। আপনার ক্রনিক রোগ বা দীর্ঘস্থায়ী রোগ যেমন - ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ এর সমস্যা থাকলে ডাক্তারকে ধারণা দিতে অবশ্যই ভুলবেন না। পূর্ববর্তী পরীক্ষার কাগজপত্র ও প্রেসক্রিপশন অবশ্যই সঙ্গে আনবেন মনে রাখবেন সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ডাক্তার ও রোগী দুজনকেই ভূমিকা রাখতে হয়।
রোগাক্রান্ত হলে নির্দিষ্ট রোগের চিকিৎসা পেতে আপনাকে নির্দিষ্ট চিকিৎসকের কাছেই যেতে হবে তাই রোগ ভেদে আপনাকে কোন চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে তা জানা প্রয়োজন।
নিচে কয়েকটি রোগের উল্লেখ করা হলো অর্থাৎ কোন রোগের চিকিৎসার জন্য কোন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন জেনে নিন
বক্ষব্যাধি চিকিৎসা -অ্যাজমা বা হাঁপানি শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা ফুসফুসে পানি জমা দীর্ঘদিন যাবত কাশি এই ধরনের সমস্যা হলে আপনাকে একজন বক্ষব্যাধি চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে তারা মূলত ফুসফুসের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন।
চক্ষু বিশেষজ্ঞ - চোখের যে কোন সমস্যা সহ চশমার পাওয়ার এর বিভিন্ন বিষয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। অনেক সময় চোখের সমস্যা থেকে মাথাব্যথা সমস্যায় রোগীকে ভুকতে দেখা যায়। এমন পরিস্থিতিতে মাথা ব্যাথার কারণ যদি চোখের সঙ্গে সম্পর্কিত হয় তবে সে ক্ষেত্রে চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকেন চক্ষু বিশেষজ্ঞেরা।
ইএনটি বিশেষজ্ঞ - কান নাক গলায় যেকোনো সমস্যা বা অসুখ হলে এর চিকিৎসার জন্য আপনাকে একজন ইএনটি বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে। নাক কান গলা কে সংক্ষেপে বলা হয় ইএনটি। আর এর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বলা হয় ইএনটি বিশেষজ্ঞ।
ডার্মাটোলজিস্ট/চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ - কোন অসুখে একজন ডার্মাটোলজিস্ট ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন। ত্বক চুল নখ নাকের ঝিল্লি এবং চোখের পাতার আস্তরণে কোন সমস্যা অনুভব করলে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বা ডার্মাটোলজিস্ট ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিতে হবে।
গ্যাস্ট্রোলজি বিশেষজ্ঞ - এই ডাক্তারকে অনেকে হেপাটোলজি বা লিভার অথবা যকৃত বিশেষজ্ঞ বলে থাকেন। পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা জন্ডিস গ্যাসের সমস্যা হেপাটাইটিস পি ও লিভার খাদ্যনালী বা পাকস্থলীতে ক্ষত অথবা খিদে না পাওয়ার সমস্যা লিভারে চর্বি ও পেটে গ্যাস এসিডিটি চিকিৎসা দেন গ্যাস্ট্রোলজি বিশেষজ্ঞরা ।
সাইকোলজিস্ট বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ - মানসিক অবসাদ বিষন্নতা সহ বিভিন্ন মানসিক সমস্যার চিকিৎসার জন্য একজন মনোরোগ বা সাইকোলজিস্ট ডাক্তারের কাছে আপনাকে যেতে হবে।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ - হার্ট বা হৃদপিন্ডের যেকোনো সমস্যার চিকিৎসা নিতে আপনাকে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা হার্ট অ্যাটাক বুকে ব্যথা উচ্চ রক্তচাপ বুক ধরফর ইত্যাদি রোগের চিকিৎসা প্রদান করেন।
আমাদের শেষ আলোচনা
উপরের আলোচনার সাপেক্ষে আশা করি জানতে পেরেছেন কোন রোগের জন্য কোন ডাক্তারের চিকিৎসা নেওয়া দরকার এবং ডাক্তারের কাছে গিয়ে কি বলা উচিত। আমাদের পুরো আর্টিকেলটি যদি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি একটা প্রাথমিক ধারণা আপনাদের হয়ে যাবে। যে কোন রোগের জন্য কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যা উচিত তাই পোস্টটি পড়ে যদি উপকৃত হয়ে থাকেন অন্যদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না আর এরকম অনেক অজানা প্রশ্নের তথ্য জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url