ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য টাটা কোম্পানি যেভাবে তৈরি হলো

ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য টাটা কোম্পানি যেভাবে তৈরি হলো অনেকেরই অজানা। ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য টাটা কোম্পানি যেভাবে তৈরি হলো পোস্টে বর্ণনা রয়েছে। ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য টাটা কোম্পানি যেভাবে তৈরি হলো জেনে নিন।
কারণ আমরা এখানে ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য টাটা কোম্পানি যেভাবে তৈরি হলো, টাটা কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা কে, প্রথম থেকে তৃতীয় প্রজন্ম টাটা কিভাবে শুরু করে তার সম্পূর্ণ বিস্তারিত এবং জিরো থেকে শুরু করে কিভাবে গড়ে তুললেন টাটা সাম্রাজ্য ইত্যাদি সকল বিষয় সম্পর্কে জানব।

পেজ সূচিপত্র

টাটা কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা কে

টাটা কোম্পানির প্রতিষ্ঠা হওয়ার সময়কাল ছিল ব্রিটিশ শাসনের সময়কাল থেকেই। আর সেই সময়ে এই টাটা কোম্পানিকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জামসেদজি টাটা নামে একজন ব্যক্তি। সেই সময় থেকেই তিনি এই ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য টাটা কোম্পানি যেভাবে তৈরি হলো তার ব্যবসা শুরু করেছিলেন।

তিনি ছিলেন মুম্বাইয়ের এক রপ্তানি ব্যবসায়ীর ছেলে। পড়াশোনা শেষ করে নিজ পিতার সাথে ব্যবসা শুরু করেন। সেই ব্রিটিশ শাসনকাল থেকেই তিনি হংকংয়ে চলে গিয়েছিলেন ব্যবসাকে ছড়িয়ে দিতে এবং পরবর্তীতে এই ব্যবসা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

জাপান, চীন, গ্রেট ব্রিটেন সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ব্যবসার সুনাম ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এরই মধ্যে তিনি নিজেই একটি রপ্তানি প্রতিষ্ঠান তৈরি করলেন যার কয়েক বছরের মাথায় তিনি দুইটি টেক্সটাইল মিল প্রতিষ্ঠা করেন। ব্যবসা ছড়িয়ে পড়তে থাকে বিশ্বজুড়ে।
তার এই টেক্সটাইল মিলগুলো তখনও ভারতের কাছেই অজানা হয়ে রয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে শিল্প বিপ্লবের এক পর্যায়ে ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য টাটা কোম্পানি যেভাবে তৈরি হলো এবং তিনি প্রতিষ্ঠা করলেন স্টিল প্রোডাকশন প্লান্ট। যা জার্মানির প্লান্ট গুলোর আদলে তৈরি করা হয়েছে।

তিনি সেই সময় ব্যবসা করতে যেয়ে ট্যুরিজমের সত্যিকার মজাও পেয়েছিলেন। তাই তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি হোটেল চেইন তৈরি করার। সেই সময়ে ভারতকে তিনি তাজমহল প্যালেস হোটেল নামে একটি অন্যতম হোটেলও উপহার দিয়েছিলেন।

ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য টাটা কোম্পানি যেভাবে তৈরি হলো যার নমুনা স্বরূপ ব্রিটিশ শাসনকাল থেকেই শুরু হয়। তার সব সময় উদ্দেশ্য ছিল মানুষের উপকারে আসা। ধীরে ধীরে এভাবেই টাটা কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা তার ব্যবসাকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।

ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য টাটা কোম্পানি যেভাবে তৈরি হলো

ব্রিটিশ শাসনামল থেকেই এই টাটা কোম্পানি বাণিজ্যিকভাবে বিস্তার লাভ করে। ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য টাটা কোম্পানি যেভাবে তৈরি হলো তার একটি বিস্তারিত বর্ণনা নিচে দেওয়া হলো -

১। আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের সফলভাবে এই বাণিজ্য শুরু হয় ব্রিটিশ শাসনের সূচনা লগ্ন থেকে এই কোম্পানি প্রতিষ্ঠা হয়। এক বিশাল বাণিজ্য মহলে সাম্রাজ্য গড়ে তোলে।

২। ধীরে ধীরে গত দুই শতাব্দি ধরে ভারতে একের পর এক শিল্পের গোড়াপত্তনের সময় থেকে এই টাটা কোম্পানির গড়ে উঠে।

৩। টাটা কোম্পানির গড়ে উঠার মূল মূল বিষয় সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের দুই শতাব্দী পিছনে যেতে হবে‌। কারণ এই দুই শতাব্দীর মধ্যে কয়েক প্রজন্মের মাধ্যমে এই টাটা কোম্পানি গড়ে উঠে।

৪। প্রথমে এই টাটা কোম্পানি শুরু হয় ভারতীয় উপমহাদেশের এক বড়োসড়ো রপ্তানিকারকের মাধ্যমে যখন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শাসনকাল চালাচ্ছিল তখন থেকেই এই টাটার যাত্রা শুরু হয়।

৫। টাটা কোম্পানির বর্তমান মালিক হিসেবে রতন টাটা এখন পরিচালনা করছেন এবং টাটা গ্রুপের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে এই রতন জি কাজ করে যাচ্ছেন।

৬। তার পূর্বপুরুষ যারা ছিলেন জমসেদজি এবং জিআরডি টাটা তারা এই কোম্পানিকে একদম শুরু থেকেই ধীরে ধীরে ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য টাটা কোম্পানি যেভাবে তৈরি হলো তার মূল হোতা ছিলেন।

৭। তারা কোম্পানিকে এতটাই উচ্চ শিখরে পৌঁছে দিয়ে গিয়েছেন যে পরবর্তী প্রজন্ম যারা এই টাটা কোম্পানিকে পরিচালনা করে আসছেন তাদের জন্য প্রতিটি বিষয় সহজ হয়ে গিয়েছে।

৮। বর্তমানে ভারতের সবচাইতে নামকরা প্রতিটি কোম্পানির মধ্যে এই টাটা কোম্পানি এক নম্বরে অবস্থান করছে। আর এই রতন টাটাই এখন ভারতের সবথেকে বড় যতজন ব্যবসায়ী রয়েছেন তার মধ্যে তিনি একজন।

৯। সবচাইতে ভালো একটি খবর হল এটাই যে টাটা কোম্পানির প্রতি বছর যেই পরিমাণ লাভ করে থাকে, তার পঁয়ষট্টি ভাগ দেশের বিভিন্ন ধরনের দান কাজে ব্যয় করা হয়।

১০। যখনই দেশের অর্থনৈতিক কোন সংকটের সময় আসে, তখন অর্থনৈতিক দিক থেকে দেশকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করে থাকে।

প্রথম প্রজন্মের জামসেদজি টাটা কিভাবে শুরু করলেন

টাটা গল্পের প্রথম প্রজন্ম যিনি ছিলেন তিনি ছিলেন জামসেদজি টাটা। যিনি ব্রিটিশ শাসনের সময় থেকে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। ধীরে ধীরে নিজের ব্যবসাকে এমন ভাবে দাঁড় করিয়েছেন যে বিশ্বের সকল প্রান্তে তার ব্যবসা ছড়িয়ে পড়েছে।

কোম্পানিটি প্রথমে খুব ছোট ভাবেই শুরু হয়েছিল যেহেতু জামসেদজি টাটা ছিলেন মুম্বাইয়ের এক রপ্তানি ব্যাবসায়ীর ছেলে। তিনি পড়াশোনা শেষ করে ব্রিটিশ রাজ্যের শাসনের থেকে এই ব্যবসা শুরু করেন। যখন তিনি ধীরে ধীরে বুঝতে পারলেন যে ব্যবসা বাড়ানোর যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

ঠিক তখনই তিনি হংকংয়ে চলে গেলেন। সেখানে তিনি নিজের বাবার ব্যবসাকে ছড়িয়ে দিতে রপ্তানি ব্যবসার সাথে যুক্ত হলেন‌। কিছুদিন পর তিনি তার বাবার ব্যবসাকে জাপান, চীন এবং গ্রেট ব্রিটান সহ আরো কিছু দেশে ছড়িয়ে দিলেন।

এভাবে নিজেকে ব্যবসায়িক জ্ঞানে এমন ভাবে জড়িয়ে রাখলেন যেন ধীরে ধীরে তিনি স্বাধীনভাবে নিজেই একটি রপ্তানি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে ফেললেন। তার কিছুদিন পর কয়েক বছরের ব্যবধান এর মধ্যে তিনি দুইটি টেক্সটাইল মিল প্রতিষ্ঠা করেন। যেহেতু তিনি টেক্সটাইল মিল গুলো প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কিন্তু গোটা ভারতের কাছেই তা ছিল অজানা।
ঠিক সেই সময়ে তিনি ইউরোপে যেয়ে তার শিল্প বিপ্লবের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। যার ফলে ভারতে নিজস্ব কিছু শিল্প বিপ্লব তৈরি হতে শুরু করে। এই সময় তিনি স্টিল প্রোডাকশন প্ল্যান্ট নামে একটি জার্মানির প্ল্যান্টগুলোর আদলে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করলেন।

পরবর্তীতে তাজমহল প্যালেস হোটেল নামে একটি হোটেলও প্রতিষ্ঠা করেন। জামসেদজি সবসময়ই ব্যবসা করার শুরু থেকেই মানুষের উপকারে কিভাবে আসবেন সেই বিষয় নিয়েই ভাবতেন। তিনি তার যথেষ্ট সম্পদ দান করে দিয়েছিলেন।

ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য টাটা কোম্পানি যেভাবে তৈরি হলো যা পরবর্তীতে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানে। জীবনের শেষ সময় তিনি জার্মানি যাওয়ার পর মৃত্যুবরণ করেন এবং পরবর্তীতে তার এই বড় প্রতিষ্ঠানটি তার দুই পুত্র দেখাশোনা করে। 

দ্বিতীয় প্রজন্মের জেআরডি টাটা কিভাবে শুরু করলেন 

দ্বিতীয় প্রজন্মের জেআরডি টাটা তার পিতার এই টাটা কোম্পানিকে সহজে ভেঙে পড়তে দেননি। এই প্রতিষ্ঠানকে পুনরায় ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য টাটা কোম্পানি যেভাবে তৈরি হলো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছেন যেমন,

  • জেআরডি টাটা ভারতে প্রথম সিমেন্ট প্ল্যান্টের প্রতিষ্ঠা করেন।
  • শুধু তাই নয় তিনিই প্রথম ইন্সুরেন্স কোম্পানি চালু করেন।
  • পরবর্তীতে তার নেতৃত্বে চৌদ্দটি কোম্পানির সম্মেলন হয়।
  • তিনি পড়াশোনা করেছেন লন্ডন, জাপান, ফ্রান্স এবং ভারতে।
  • পাশাপাশি ফ্রান্সের সেনাবাহিনীতেও এক বছর কাজ করেন।
  • জেআরডির মায়ের মৃত্যুর পর স্থায়ীভাবে তিনি ভারতে চলে আসেন।
  • এই সময়ে তিনি ফ্রান্সের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে ভারতের নাগরিক লাভ করেন।
  • তিনি একজন দক্ষ পাইলটও ছিলেন যার ফলে পরবর্তীতে ভারতের প্রথম পাইলট লাইসেন্স গ্রহণ করেন।‌‌ তিনি ছিলেন ভারতের ইতিহাসে প্রথম পাইলট।
  • টাটা কোম্পানি দেখাশোনা করার সময় তিনি প্রথম এয়ারলাইন প্রতিষ্ঠা করেন।
  • যার ফলে পরবর্তীতে টাটা এয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটি অত্যন্ত সফলভাবে এয়ার সার্ভিস ব্রিটিশদের সাহায্য করতে পারে।
  • এই টাটা কোম্পানিকে তিনি দীর্ঘ বায়ান্ন বছর ধরে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
  • ঠিক এই সময়ে অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে অনেক কোম্পানিই ছিল যেগুলো ভেঙে পড়েছিল।
  • এই সময়েই তিনি তার এই টাটা কোম্পানির দায়িত্ব রতন টাটার কাছে অর্পণ করেন।

তৃতীয় প্রজন্মের রতন টাটা কিভাবে শুরু করলেন

তৃতীয় প্রজন্মের সময়ে রতন টাটা দায়িত্ব পালন শুরু করেন। এই সময়ে টাটা কোম্পানি প্রায় মৃত্যুর মুখে পতিত হওয়ার মত অবস্থা। টাটার একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ছিল নেলকো যা বড় রেডিও তৈরি করার একটি প্রতিষ্ঠান। এই মার্কেট শেয়ার থেকে নেমে চলে যায় তিন পার্সেন্টেজ।

এই অবস্থায় রতন টাটাকে প্রতিষ্ঠানটি তুলে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু রতন টাটা ভবিষ্যৎকে কেন্দ্র করে রেডিওর পাশাপাশি প্রযুক্তি নির্ভর কিছু পণ্য তৈরি করার চিন্তা করেন। নেলকো ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে এবং রতন টাটা এই গ্রুপের নেতৃত্ব দেন। রতন টাটা যখন টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান হয়েছেন।

সেই সময়ের সমাজতন্ত্র অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছিল। যার ফলে পরবর্তীতে অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মূল টাটা গ্রুপের কর্তৃত্ব কম ছিল। রতন টাটা এসে সেই মূল প্রতিষ্ঠানকে শতকরা বিশ ভাগ শেয়ার বিক্রি করে সব অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনে ফেললেন। অনেক বেশি করে শেয়ার কিনার ফলে তার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে সবকিছু।

এই সময়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীদের সামনে তার অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখা খুবই কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। তাই জন্য তিনি প্রতিযোগীদেরকে নিয়ে বানিয়ে ফেললেন টাটা। একটি কোম্পানিকে কিনেছিলেন ইউরোপের স্টিল কোম্পানি যা চলে যায় টাটা স্টিলের অধীনে।
ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য টাটা কোম্পানি যেভাবে তৈরি হলো যার ফলে পরবর্তীতে পণ্য ক্রয় করতে যেয়ে টাটা গ্রুপের অর্থ ব্যয় হয় ঠিকই কিন্তু ক্রয়ের পরে এটি অনেক বড় ধরনের মার্কেট পেয়ে যায়। টাটা যদিও একটি ভারতীয় কোম্পানি কিন্তু এর আয় হয় সারা বিশ্ব থেকেই।

রতন টাটা প্রথম অবস্থায় যদি হাল ছেড়ে দিয়ে সেই অবস্থায় থাকতেন তাহলে আজকের এই অবস্থায় আসতে পারতেন না। তাই তার সাহসী এবং অত্যন্ত দূরদর্শিতার ফলেই আজকের রতন টাটা ইতিহাসকে বদলে দিয়েছিল।

জিরো থেকে শুরু করে কিভাবে গড়ে তুললেন টাটা সাম্রাজ্য

ভারতীয় সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে টাটা প্রতিষ্ঠান একটি ছয়টি মহাদেশের প্রায় শতাধিক কোম্পানির মাধ্যমে এই টাটা গ্রুপের ব্যবসা পরিচালিত হয়ে আসছে। এই কোম্পানি বর্তমানে পরিচালনা করছেন রতন টাটা তিনিই গ্রুপের মালিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জিরো থেকে শুরু করে কিভাবে গড়ে তুললেন টাটা সাম্রাজ্য চলুন সেই বিষয়ে জেনে আসি।

১। টাটা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জামসেদজি টাটার নিঃসন্তান ছোট ছেলে রতন টাটার পিতাকে দত্তক হিসেবে নিয়েছিলেন। দশ বছর বয়সেই তিনি তার বাবাকে হারিয়েছিলেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই তার দাদীর কাছে পালিত হয়েছিলেন।

২। ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য টাটা কোম্পানি যেভাবে তৈরি হলো যা ঠিক সেই সময়ে একদমই শূন্য থেকে শুরু করেছিলেন। আর সাধারণ মানুষদের মতই তার বেড়ে উঠা ছিল। কিন্তু তিনি কঠোর পরিশ্রম এবং ভাগ্যের অপূর্ব খেলায় জিতে গিয়েছিলেন।
 
৩। রতন টাটার বাবার নাম ছিল নাভাল টাটা। টাটা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জামসেদজি ছোট ছেলে তাকে দত্তক নিয়েছিলেন। সেই ভাগ্যের ফেরে নাবাল টাটা। কিন্তু রতন টাটার শৈশব সেই রকম মজার ছিল না।

৪। নাবাল টাটার প্রথম স্ত্রীর গর্ভে জন্ম নেন রতন টাটা। তার আরেক ভাই ছিল যখন তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন তখন রতন টাটা ও তার মা খুবই অসহায় জীবনের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন। ঠিক সেই সময় শিশু ও তার মায়ের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেন তার দাদি।

৫। মুম্বাইয়ের এক স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন। রতন টাটা ঠিক সেই সময় থেকেই যখন কলেজ শেষ করে মাধ্যমিক পর্যায়ে শেষ করে স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হলেন। এডভান্স ম্যানেজমেন্ট বিষয়ের উপর তিনি হার্ডওয়ার থেকে পড়াশোনা করেন।

৬। তারপর থেকে তিনি টাটা স্টিলের কাজ করা শুরু করেন। জেআরডি টাটা রতন টাটার মেধা ও পরিশ্রম যথেষ্ট মূল্য দিয়েছিলেন। টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান করে দিয়েছিলেন ঠিক সেই সময়ই তার জীবনের মোড় ঘোরতে থাকে।

৭। তিনি বিশ্বের সাথে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সাফল্যের দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক ভাবে সবার কাছে পরিচিতি লাভ করিয়েছেন।

৮। নিজের সঠিক পরিকল্পনা, আত্মবিশ্বাস ও ঝুঁকিকে মাথায় রেখে তিনি সামনের দিকে এগিয়ে যান। তিনি সাহস ও নৈতিকতার সাথে প্রতিষ্ঠানকে সারাবিশ্বে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন।

৯। শুধু ভারতেই নয় এশিয়া মহাদেশ, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিনি তার টাটা কোম্পানিকে বিশ্বের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছেন।

১০। শূন্য হাতে শুরু করে এখন তিনি শত বিলিয়নের মালিক হয়ে আছেন। তিনি এই যুগের এক কিংবদন্তি এবং সারা বিশ্বের ব্যবসায়ীদের কাছে এক অনুপ্রেরণার নাম।

শেষকথা

আশা করছি ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য টাটা কোম্পানি যেভাবে তৈরি হলো তা খুব ভালোভাবে জানতে পেরেছেন। যদি পোস্টটি পড়ে ভালো লেগে থাকে তাহলে পোস্টের নিচের অংশে মন্তব্য করে আমাদের সাথেই থাকুন। ২৫২৭৫

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url