থানকুনি পাতার ২০টি ঔষধি গুণ
সূচিপত্রঃ থানকুনি পাতার ২০টি ঔষধি গুণ
- থানকুনি পাতার পরিচয়
- থানকুনি পাতার ২০টি ঔষধি গুণ
- থানকুনি পাতার ঔষধি গুণাবলী
- থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা
- শেষ কথা
থানকুনি পাতার পরিচয়
বাংলা নাম হচ্ছে থানকুনি। অঞ্চল ভেদে এটা ধুলা বেগুন, মানা মানি, থুলকড়ি, ঢোলামানি, আদা মনি, থানকুনি, তিতুরা, মানকি, টেয়া, আদা গুনগুনি ইত্যাদি নামে পরিচিত। যার ইংরেজি নাম হচ্ছে Indian Pennywort এবং বৈজ্ঞানিক নাম হল- Centella asiatica। থানকুনি হচ্ছে একটা অনাবাদি ওষধি গাছ। যা বাড়ির আনাচে কানাচে, পুকুর পাড়ে, রাস্তার পাশে, মাঠে স্যাঁতস্যাঁতে জায়গা গুলাতে বর্ষাকালের সময় বেশি পাওয়া যেতে পারে।
আরো পড়ুনঃ লোকেশন ট্র্যাক করার সহজ টিপস
এছাড়া প্রায় সারা বছরই কমবেশি থানকুনি পাতা পাওয়া যায়। থানকুনি গাছ পাওয়া যায় মালেশিয়া, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, উত্তর অস্ট্রেলিয়া, সিংহল, পাপুয়া নিউগিনি, ভারত এবং এশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে ভেষজ হিসেবে এর বহুল ব্যবহার রয়েছে। থানকুনি পাতার বহুল ব্যবহার রয়েছে প্রাচীন আফ্রিকীয়, আয়ুর্বেদিক, চৈনিক ইত্যাদি বিভিন্ন দেশের দেশি চিকিৎসা বিদ্যায়। আয়ুর্বেদিক শাস্ত্র মতানুসারে, মানব শরীরের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের মহা ঔষধ হচ্ছে থানকুনি পাতা।
থানকুনি পাতার ২০টি ঔষধি গুণ
থানকুনি পাতা একটা ভেষজ উদ্ভিদ। শরীরের জন্য ছোট ছোট এই পাতার গাছ অনেক উপকারী। Indian Pennywort হচ্ছে এর ইংরেজি নাম। পাতা বলুন বা শাক, উপকারিতার জন্য থানকুনি একটা পরিচিত নাম। থানকুনি পাতার কোনো স্বাদ নাই। অনেক রোগের ওষুধ হিসেবে থানকুনি পাতার ব্যবহার করা যায়। চলুন থানকুনি পাতার ২০টি ঔষধি গুণ সম্পর্কে জেনে নিই।
-
পেঁপে কিংবা বেগুনের সাথে মিশিয়ে থানকুনি পাতা রান্না করে এক মাস খেলে
হজম শক্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
-
এক চামচ শিউলি পাতার রসের সাথে এক চামচ থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে প্রত্যেক
দিন সকালে খেলে জ্বর প্রতিরোধ করবে।
- গাছের ছাল অল্প পরিমাণ, কাঁচা হলুদের রস, একটা কচি আনারসের পাতা, চার পাঁচটা গাছের শিকড় ভালোভাবে ধুয়ে একসাথে বেটে রস করে খেলে অসুখ ভালো হয়ে যায়। এটা ছোট বাচ্চাদের জন্য বেশি কার্যকর হয়।
-
আধা কেজি দুধের সাথে ২৫০ গ্রাম মিশ্রি এবং থানকুনি পাতার রস ১২৫ গ্রাম
একসাথে মিশিয়ে প্রত্যেকদিন সকালে এক সপ্তাহ খেলেই গ্যাস্ট্রিক ভালো হয়ে
যায়।
- দুই চামচ থানকুনি রসের সাথে সামান্য চিনিসহ খেলে সাথে সাথে খুসখুসে কাশিতে উপকার পাওয়া যায়। এরকমভাবে অন্তত এক সপ্তাহ খেলে পুরোপুরি ভালো হবার সম্ভাবনা থাকে।
- প্রত্যেকদিন সকালে খালি পেটে চার চামচ থানকুনি পাতার রসের সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে সাত দিন খেলে রক্ত দূষণ দূর হবে।
- যে সকল বাচ্চা দেরিতে কথা বলতে পারে কিংবা অস্পষ্ট ভাবে কথা বলে, তাদের এক চামচ থানকুনি পাতার রস গরম করে ঠান্ডা হলে ২০/২৫ ফোটা মধু মিশিয়ে ঠান্ডা দুধের সঙ্গে কিছুদিন খাওয়াতে পারলেই উপকার পাবে।
- থানকুনি পাতা প্রত্যেকদিন সকালে পাঁচ থেকে সাতটি চিবিয়ে খেলে আমাশয় ভালো হয়ে যায়।
- থানকুনি পাতা বেটে গরম ভাতের সঙ্গে খেলে পেট ব্যথা ভালো হয়ে যায়।
- প্রত্যেকদিন সকাল করে থানকুনির রস এক চামচ, 5/6 ফোঁটা হলুদের রস সামান্য চিনি এবং মধু সহ একমাস খেলেই লিভারের সমস্যা দূর হয়ে যায়।
-
যদি মুখ মলিন হয়ে যায়, লাবণ্যতা কমতে থাকে তাহলে ৫-৬ চামচ থানকুনি পাতার রস
দুধ দিয়ে নিয়মিত খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
- কোথাও থেঁতলে গেলে থানকুনি গাছ বেটে হালকা গরম করে আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যাবে।
- ভিটামিন ও অপুষ্টির অভাবে চুল পড়ে গেলে পুষ্টিকর ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারের সাথে পাঁচ ছয় চামচ থানকুনি পাতার রস দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
- মলের সাথে শ্লেষ্মা গেলে, পরিষ্কার ভাবে মল ত্যাগ না হলে, পেটে গ্যাসের সমস্যা হয়ে থাকলে কিংবা মাথা ধরা এ সকল ক্ষেত্রে তিন থেকে চার চামচ থানকুনি পাতার রস এবং সমপরিমাণ গরুর কাঁচা দুধ একসাথে মিশিয়ে নিয়মিত খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
- ঠান্ডায় নাক বন্ধ হলে কিংবা সর্দি হলে থানকুনির শিকড় এবং ডাটার মিহি গুড়ার নস্যি নিলে উপকার পাবেন।
থানকুনি পাতার ঔষধি গুণাবলী
উপরের উল্লেখিত তথ্যগুলো যদি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে হয়তো
থানকুনি পাতার ২০টি ঔষধি গুণ গুলোর বিষয়ে জেনেছেন। কেননা ইতো পূর্বে আমরা
থানকুনি পাতার ২০টি ঔষধি গুণাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
এখন থানকুনি পাতার ঔষধি গুণাবলী সম্পর্কে আলোচনা করব।
মাথা ব্যাথা দূর করাঃ থানকুনি পাতার রস মাথাব্যথা দূর করার ক্ষেত্রে অনেক কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। গরম পানির সাথে নিয়মিত থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে খেলে মাথা ব্যথা দূর হবে।
ফুসফুসের সংক্রমণ রোধ করেঃ থানকুনি পাতায়ে রয়েছে পুষ্টি উপাদান
যা কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। যদি আপনার ফুসফুসের কোন ধরনের সমস্যা থেকে
থাকে সেক্ষেত্রে আপনি গরম পানির সাথে থানকুনি পাতার রস মিশ্রিত করে কিছুদিন
নিয়মিত খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
আরো পড়ুনঃ কম্পিউটার ব্যবহার করতে সবচেয়ে বেশি কি দরকার
নিদ্রাহীনতা দূর করেঃ থানকুনি পাতা নিয়মিত খাওয়ার ফলে
নিদ্রাহীনতা দূর করে থাকে। যদি আপনার নিদ্রাহীনতা বা ইনসোমনিয়ার সমস্যা থেকে
থাকে, সে ক্ষেত্রে আপনি নিয়মিত থানকুনি পাতার চা এবং থানকুনি পাতার সালাত খেতে
পারেন। কিছুদিন নিয়ম করে খেলে নিদ্রাহীনতার সমস্যা আশা করি দূর হবে।
ব্যথা নিরাময় করাঃ শরীরের যেকোনো ব্যথা দূর করবার জন্য থানকুনি পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে। কেননা, যে কোন ব্যথাযুক্ত স্থানে থানকুনি পাতার রস লাগালে সকল ধরনের ব্যথা দূর হয়ে যায়। তাই শরীরের কোন ধরনের ব্যথা দূর করতে থানকুনি পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন।
মুখের সংক্রমণ দূর করাঃ যদি আপনার মুখে কোন ধরনের সংক্রমণ থেকে
থাকে কিংবা মুখ দুর্গন্ধযুক্ত হয় সেক্ষেত্রে আপনি ধানকুনি পাতার রস দিয়ে
নিয়মিত গড়গড়া করলে উপকৃত হবেন।
থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা
আমরা এখন কিছু থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানব।
- ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে থানকুনি পাতা সাহায্য করে।
-
থানকুনি পাতা হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
- ক্ষত সারাতে সাহায্য করে থাকে।
- জ্বরের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
- শরীর থেকে টক্সিক উপাদান বের করতে থানকুনি পাতা সাহায্য করে থাকে।
- পেটের সমস্যা দূর করে।
- আমাশয়ের সমস্যা দূর করে থাকে।
- কাশি কমাতে থানকুনি পাতা বেশ উপকারী।
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় থানকুনি পাতা দারুন উপকারি।
শেষ কথাঃ থানকুনি পাতার ২০টি ঔষধি গুণ
থানকুনি পাতার ২০টি ঔষধি গুণ সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। আজ আর নয়, থানকুনি পাতার ২০টি ঔষধি গুণ সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।
আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই থানকুনি পাতার ২০টি ঔষধি গুণ সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url