শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আপনারা জানতে চেয়েছেন, শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে। শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম জানতে আজকের আর্টিকেলটি সম্পুর্ণ পড়ুন। আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব, শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে। চলুন তাহলে দেখে নেই, শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম গুলো কি কি।

পোস্ট সূচিপত্রঃ শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম

ভূমিকা 

অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। এটিকে তরল সোনা বলেও আখ্যায়িত করা হয়। অলিভ অয়েল বিভিন্নভাবেই ব্যবহার করা হয়ে থাকে, এটি রান্নার তেল হিসেবে ব্যবহার করা যায় যেটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। এবং সেই সাথে ত্বক ও চুলের যত্নে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অলিভ অয়েলের মধ্যে রয়েছে, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন-ই, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-কে যা আমাদের ত্বকের জন্য বা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। অলিভ অয়েল বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা গেলেও আজ আপনাদের মাঝে আলোচনা করব, শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে। শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানতে নিচের আর্টিকেল টুকু পড়ুন।

শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম

বহু যুগ ধরেই ত্বকের যত্নে ও চুলের যত্নে নানা রকম তেল ব্যবহার করে আসছি। তবে অলিভ অয়েল এমন একটি অয়েল যা দিয়ে, রান্না করার পাশাপাশি, চুল ও ত্বকের যত্নেও ব্যবহার হয়ে আসছে। এই একটি মাত্র তেল যে কত রকমের সমস্যার সমাধান দিতে পারে সেটি অনেকের কাছেই অজানা। চলুন তাহলে জেনে নেই, শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম গুলো।
কোমল ত্বক পেতে অলিভ অয়েলঃ আমরা আমাদের ত্বক কোমল রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের ময়েশ্চারাইজার বা ক্রিম ব্যবহার করে থাকি। তবে অনেক সময় দেখা যায় ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করার পরেও ত্বক অনেকটা রুক্ষ বা ড্রাই মনে হয়। আর কোমল ত্বক পেতে, অর্গানিক এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত ত্বক নরম ও সুন্দর থাকে।

স্কিন ড্যামেজ কমাতে অলিভ অয়েলঃ শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম, স্কিন ড্যামেজ কমাতে অলিভ অয়েল খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখে। কারণ এতে আছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-ই এবং ভিটামিন-কে এর প্রত্যেকটি ভিটামিনের আলাদা আলাদা বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। আর ভিটামিন-ই একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা স্কিনের ড্যামেজ কমাতে সাহায্য করে।

শরীরের ময়লা দূর করতে অলিভ অয়েলঃ আমাদের শরীরে ময়লা জমে একসময় মৃত কোষের জন্ম দেয়। আর এই মৃত কোষগুলো তুলতে অলিভ অয়েল খুবই কার্যকর। ব্যবহারের নিয়ম- একটি পরিষ্কার পাত্রে ৩ টেবিল চামচ পরিমাণ অলিভ অয়েল, সেই সাথে ২ টেবিল চামচ পরিমাণ মধু এবং আধা কাপ চিনি নিন। তিনটি উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে স্ক্রাব এর মত পুরো শরীরে ঘষতে থাকুন। এভাবে কিছুক্ষণ ঘষার ফলে শরীরের মৃত কোষ গুলো উঠে আসবে। এরপর শরীর ভালোভাবে ধুয়ে নিন এবং দেখবেন শরীর কতটা উজ্জ্বল ও নরম হয়ে যাবে।

পেটের দাগ বা স্ট্রেচ মার্ক দূর করতে অলিভ অয়েলঃ শরীরের যেকোনো ধরনের ফাটা দাগ দূর করে, ত্বক মসৃণ করতে সাহায্য করে অলিভ অয়েল। আপনার স্ট্রেচ মার্ক দূর করতে, সেই স্ট্রেস মার্কের উপর অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করুন। আপনার স্ট্রেচ মার্ক যদি পুরনো হয়ে থাকে তবুও সেটা হালকা হতে সাহায্য করবে এই অলিভ অয়েল। তবে এটি নিয়মিতভাবে ব্যবহার করতে হবে।

চুলের পরিচর্যায় অলিভ অয়েলের ব্যবহার

আমরা যেমন ত্বকের বিভিন্ন রকম সমস্যায় পড়ি প্রতিনিয়তই, ঠিক তেমনি চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে অত্যন্ত চুল পড়ার সমস্যা ও অত্যন্ত রুক্ষ শুষ্ক চুল। এবং সেই সাথে খুশকির সমস্যা চুলের পরিচর্যায় অলিভ অয়েলের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এতে রয়েছে ওমেগা-৩ অ্যাসিড এবং অন্যান্য উপাদান। যা চুলের গ্রোথ করতে সাহায্য করে এবং সেই সাথে অতিরিক্ত চুল পড়া কমিয়ে আনে। 
মাথায় খুশকির সমস্যায় অলিভ অয়েল খুবই কার্যকর। এটি নিয়মিত ভাবে ব্যবহারের ফলে মাথার খুশকি বা ড্যানড্রাফের সমস্যা দূর হয়ে যায়। চুল নরম, সিল্কি এবং জট মুক্ত করতে হলে অলিভ অয়েলের একটি প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। ব্যবহারের নিয়ম- অলিভ অয়েল, লেবুর রস এবং পানি, তিনটি  উপকরণ সমপরিমাণে নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর হালকা ভেজা চুল থাকা অবস্থায় ভালোভাবে লাগিয়ে রাখুন। ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর ভালোভাবে শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে চুল হবে অত্যন্ত ঝরঝরে এবং জট মুক্ত।

ঠোঁটের যত্নে অলিভ অয়েলের ব্যবহার 

আমাদের মুখমন্ডলের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং সুন্দর হল ঠোঁট। আর এই ঠোঁট যদি সুন্দর না হয় বা ঠোঁট যদি ফেটে যায় সে ক্ষেত্রে মুখের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। আর তাই ঠোঁটের যত্নে অলিভ অয়েল এর ব্যবহার সম্পর্কে আপনাদের জানাব।

ঠোঁটের যত্নে অলিভ অয়েলের ব্যবহারে ঠোঁট অত্যন্ত নরম এবং সুন্দর হয়। যদি কারো ঠোঁট অত্যন্ত ড্রাই বা ফেটে থাকে সেক্ষেত্রে লিপস্টিক ব্যবহার করলে তা ঠিকমতো বসতে চাই না। কিন্তু অলিভ অয়েল ব্যবহার করার ফলে ঠোঁটের এ সমস্যা নিমিষে দূর করা সম্ভব। কারণ অলিভ অয়েলে আছে ভিটামিন-ই যা ঠোঁটের জন্য খুবই উপযোগী, এটি ময়শ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। 

ঠোঁটের যত্নে প্রতিদিন অলিভ অয়েল ব্যবহার করার ফলে ঠোঁটের কালচে ভাব দূর হয়, ঠোট হয় গোলাপী এবং অত্যন্ত নরম। অলিভ অয়েল দিয়ে ঠোঁট স্ক্রাব করা যায়, এতে ঠোঁট অনেক বেশি সুন্দর দেখায়। এটি ব্যবহারের নিয়ম- পরিমাণমত অলিভ অয়েল, সেই সাথে ১ টেবিল চামচ পরিমাণ চিনি এবং ১/২ ফোঁটা লেবুর রস নিন। তিনটি উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে ঠোটে ভালোভাবে স্ক্রাব করতে হবে। কিছুক্ষণ ঘষার পর পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেললে ঠোটের উপরের কালচে ভাব এবং মরা চামড়া গুলো উঠে আসবে। এতে করে ঠোঁট অনেকটা গোলাপি হবে এবং সফট হয়ে যাবে।

শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়মঃ পরিশেষে

শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহারে নানা রকম সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আর তাই প্রাচীনকাল থেকেই এই অলিভ অয়েল শরীরে ব্যবহার করা হয়।
আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা জেনেছেন, শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম, চুলের পরিচর্যায় অলিভ অয়েলের ব্যবহার ও ঠোঁটের যত্নে অলিভ অয়েলের ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে। আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনারা উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে আর্টিকেলটি বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন, ধন্যবাদ। ২৫২৪২

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url